পুকুরে অ্যামোনিয়া ও তার প্রতিকার?

পুকুরে অ্যামোনিয়া হওয়ার কারণ ও  তার প্রতিকার?



সাধারণত যে সব পুকরে মাছ চাষ করা হয় সেই সব পুকুরে অ্যামোনিয়ার পরিমান টা বেশি হয়ে থাকে। যদি পুকুর ছোট হয় আর মাছের পরিমান বেশি হয় এবং খাদ্য খাওয়ানো হয় তাহলে অ্যামোনিয়া হওয়ার সম্ভবনা বেশি হয়ে থাকে। আর যদি পুকুর বড় এবং পানি বেশি এবং খাদ্য কম খাওয়ানো হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে অ্যামোনিয়া হওয়ার সম্ভবনা কম থাকে। 

 
যদি আপনার পুকুরে অ্যামোনিয়া ০.৫০ থাকে তাহলে কোন সমস্যা নেই। তবে অ্যামোনিয়া ০ রাখা ভালো। যদিও এটা কখনো সম্ভব না করাণ যেসব পুকুরে খাবার দেওয়া হয় সেইসব পুকুরে কখনো অ্যামোনিয়া ০ তে আসে না। যদি অ্যামোনিয়ার পরিমান ১ বা এর উপরে থাকে তাহলে মাছের অনেক ধরনের সমস্যা হতে পারে।

অ্যামোনিয়া কালার কার্ড :-)

পুকুরে অ্যামোনিয়া ও তার প্রতিকার?

 #অ্যামোনিয়ার ও তার প্রতিকার #মৎস্য চাষ #বটমক্লিন #

অ্যামোনিয়া দূর করার উপায়?

#চুন প্রয়োগ

চুন দিলে বিশেষ করে হাইড্রেটেড লাইম অথবা কুইক লাইম পুকুরে প্রয়োগ করলে পানির পিএইচ বৃদ্ধি হয়। এতে আমোনিয়াজনিত সমস্যা আরও প্রকট হয়। পিএইচ বৃদ্ধির কারণে পুকুরে মুক্ত অ্যামোনিয়ার পরিমাণ আরও বেড়ে যায় যা মাছের জন্য বিষাক্ত। কিন্তু চুনের ক্যালসিয়াম পানির দ্রবীভূত ফসফরাসের সাথে বিক্রিয়া করে ফসফরাসকে পুকুরে অবস্থিত অ্যালজি কর্তৃক গ্রহণে বাধা দেয়।

পুকুরে অ্যালজির ঘনত্ব বেশি হলে কম ক্ষারকত্বের পুকুরে পিএইচ ওঠানামা করে বেশি। অপরপক্ষে বেশি ক্ষারকত্বের পুকুরে পিএইচ ওঠানামা করে কম। সুতরাং চু্ন প্রয়োগ করে উচ্চ মাত্রার পিএইচকে সহনশীল মাত্রায় নামিয়ে আনা যায় যখন পুকুরের পানির পিএইচ বিকেলে উচ্চ মাত্রায় থাকে। এরূপ পুকুরে আমোনিয়া বিকেলে বিষাক্ত অবস্থায় থাকে। চুন প্রয়োগের মাধ্যমে অ্যামোনিয়ার বিষাক্ততা কমিয়ে আনার পদ্ধতিটি কম ক্ষারকত্বের পুকুরের জন্য ফলপ্রসূ হয়ে থাকে। কিন্তু বেশির ভাগ মাছ চাষের পুকুরে ক্ষারকত্ব বেশি থাকে।

ক্ষারকত্ব ২০ মিলিগ্রাম/লিটার এর বেশি থাকলে পদ্ধতিটি কাজে আসবে না। চুন প্রয়োগ শুধুমাত্র পুকুরের বিকেলের পিইচকে সহনশীল মাত্রায় নিয়ে আসে। চুন প্রয়োগে পুকুরের অ্যামোনিয়ার ঘনত্ব কমানো যায় না। তবে বিকেলের পিএইচ কমানোর মাধ্যমে পুকুরের পানির অ্যামোনিয়ার বিষাক্ত অবস্থাকে ননটক্সিক অবস্থায় নিয়ে আসা যায়।

খাদ্য প্রয়োগ বন্ধ রেখেঃ

পুকুরে অ্যামোনিয়ার প্রাথমিক উৎস্য হলো খাদ্যে প্রোটিনের পরিমাণ। মাছ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করে এবং প্রোটিন বিপাক ক্রিয়ার মাধ্যমে ভেঙ্গে মাছের শরীরে অ্যামোনিয়া উৎপন্ন করে। শরীরে উৎপন্নকৃত অ্যামোনিয়া মাছ ফুলকা দিয়ে পানিতে ছেড়ে দেয়। সুতরাং পুকুরে অ্যামোনিয়ার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য খাদ্য প্রয়োগের হার খাদ্যে প্রোটিনের পরিমাণ দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।কিন্ত তা নির্ভর করে খাদ্য নিয়ন্ত্রণ বা প্রোটিনের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ বেশি সময়ের জন্য না অল্প সময়ের জন্য করবেন তার উপর। হঠাৎ অল্প কয়েক দিনের জন্য পুকুরে খাবার বন্ধ করলে অ্যামোনিয়ার ঘনত্বের উপর তড়িত প্রভাব পড়ে

পুকুরের গভীরতা বৃদ্ধি করেঃ

অগভীর পুকুর থেকে অপেক্ষাকৃত গভীর পুকুরে পানির পরিমাণ বেশি থাকে। গভীর পুকুরে খাদ্য প্রয়োগের কারনে অ্যামোনিয়ার ঘনত্ব কম থাকে। কারন গভীর পুকুরে পানির পরিমাণ বেশি যা পুকুরের অ্যামোনিয়ার ঘনত্বকে পাতলা করে থাকে। গভীর পুকুরের বেশি পানি বাস্তবে অ্যামোনিয়ার ঘনত্বকে পাতলা করতে পারে না কারন পুকুরের জৈবিক এবং অজৈবিক পদার্থগুলো নিয়মিতভাবে পুকুরে অ্যামোনিয়া নিঃসরণ করে থাকে। অধিকন্তু পুকুরে তাপের স্তরীবিন্যাস হয়ে থাকে ফলে গভীর পুকুরের তলদেশের পানিতে অ্যামোনিয়ার পরিমাণ বেশি থাকে এবং অক্সিজেন স্বল্প থাকে। যখন নিচের স্তরের এই পানি ওপরের স্তরের পানির সাথে মিশে তখন পুকুরের পানির গুণগতমানের মারাত্বক সমস্যা দেখা দেয়।

এয়ারেশন বৃদ্ধি করেঃ

বিষাক্ত অ্যামোনিয়া পানিতে দ্রবীভূত গ্যাস। অনেকে মনে করে এয়ারেশন দ্বারা পুকুর অ্যামোনিয়া মুক্ত করা সম্ভব। এতে পানি থেকে অ্যামোনিয়া  ব্যাপন প্রক্রিয়ায় বাতাসে চলে যায়। গবেষকগণ দেখেছেন এয়ারেশনের মাধ্যমে পানি থেকে অ্যামোনিয়া কমিয়ে আনা তেমন সম্ভব নয়।  এয়ারেশনের সময় পুকুরের মোট পানির তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম পরিমাণ পানি এয়ারেশনের আওতায় আসে। এছাড়া অ্যামোনিয়ার ঘনত্ব বিশেষ করে সকালে কম থাকে। তবে ব্যাপক এয়ারেশন পুকুরে অ্যামোনিয়ার ঘনত্ব বাড়িয়ে দেয় কারণ এয়ারেশন পুকুরের তলানী থেকে অ্যামোনিয়া পুকুরে নিঃসরণে সহায়তা করে। তবে রৌদ্রজ্জ্বল দিনে বিকেলে পুকুরের পানিতে পর্যাপ্ত অক্সিজেন থাকে বিধায় দুপুরের পর এয়ারেটর চালানো হলে সমস্ত পুকুরের পানিতে অক্সিজেন মিশ্রিত হয় এবং অ্যামোনিয়া জারিত হয়ে ননটক্সিক অ্যামোনিয়ামে রূপান্তরিত হয়।

ফসফরাস সার প্রয়োগ করেঃ 

মাছ থেকে নিঃসরিত অ্যামোনিয়ার বেশির ভাগই পুকুরের অ্যালজি গ্রহণ করে। সুতরাং পুকুরে অতিরিক্ত অ্যামোনিয়া উৎপন্ন হলে অ্যালজি তা গ্রহণ করে। অ্যামোনিয়া গ্রহণের ক্ষেত্রে অ্যালজি স্পঞ্জের ন্যায় কাজ করে। এজন্য প্রমাণিত হয়েছে পুকুরে ফসফরাস সার প্রয়োগ করলে পুকুরে অ্যামোনিয়ার পরিমাণ কমে যায়। কারণ ফসফরাস সার প্রয়োগে পুকুরে অ্যালজি বৃদ্ধি পায়। পুকুরে অ্যালজির ব্লুমের ঘনত্ব বেশি থাকলে তখন ফসফরাস নাইট্রোজেনের অভাব এবং আলোর অপর্যাপ্ততার কারনে অ্যালজির বৃদ্ধি বাধাপ্রাপ্ত হয়। এই অবস্থায় পুকুরে ফসফরাস সার প্রয়োগ করলে পানির অ্যামোনিয়ার ঘনত্বের পরিমাণ কমাতে পারে না কারন অ্যালজি ইতিমধ্যেই বৃদ্ধির সর্বোচ্চ অবস্থায় পৌছে গিয়েছে।

ফসফরাস জাতীয় সার দ্বারা অ্যালজির ব্লুমকে পুনঃরায় প্রতিষ্ঠিত করা যায়। কিন্তু বেশিরভাগ পুকুরে পর্যাপ্ত ফসফরাস জাতীয় সার দ্রবীভূত অবস্থায় থাকে যা অ্যালজির ব্লুম তৈরিতে সহায়তা করে। সুতরাং অতিরিক্ত ফসফরাস সার প্রয়োগের প্রয়োজন হয় না। মাছ চাষের পুকুরে আলোর পর্যাপ্ততার ওপর অ্যালগালের বৃদ্ধি নির্ভর করে। পুকুরে আলোর তীব্রতা বৃদ্ধি পেলেই অ্যালজি কর্তৃক অ্যামোনিয়া গ্রহণ করার হার বেড়ে যায়।

যদি উপরোক্ত বিষয়গুলো কোনোটিই না করতে পারেন তাহলে একটি রাসায়নিক পণ্য ব্যবহারে আপনার অ্যামোনিয়া দূর করতে পারবেন।

আপনি চাইলেও নরমাল জিওলাই+ইউকা ব্যবহার করতে পারেন। তবে নরমাল জিওলাইটের চেয়ে অধিক কাযকারী বটমক্লিন।  ভালো ফলাফল পাবেন। ইনশাঅল্লাহ

 পণ্যের নাম                            : বটমক্লিন


প্রস্তুতকারক                                      : জিবিডাব্লিও গ্রুপ, চায়না।

বাজারজাত কারক প্রতিষ্ঠান          : সেঞ্চুরী এগ্রো লিমিটেড।

উপাদান                                             : কম্পোজিট ব্যাসিলাস, ঈষ্ট, নাইট্রোব্যাকটেরিয়াম,

                                                            কমপ্লেক্স এনজাইম

উপকারিতা                                        : পুকুরে অ্যামোনিয়া ও তলদেশে কালো কাঁদা গঠন

                                                            এবং এর থেকে সৃষ্ট   গ্যাস  উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে।

প্রয়োগ                                               : ২৫-৩০ গ্রাম প্রতি শতকে।

 

প্রয়োজনে কল করুন: 01701216917

 #অ্যামোনিয়ার ও তার প্রতিকার #মৎস্য চাষ #বটমক্লিন #

 

 



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url